কম্পিউটারের প্রকারভেদ
কার্যনীতি, আকার ও ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারকে ৩টি ভাগে ভাগ করা যায়।
১) এনালগ কম্পিউটার Analog Computer
এনালগ কম্পিউটার Analog Computer কাজ করে পরিমাপন (Measuring) পদ্ধতিতে। যেমন- বিদ্যুতের তারের ভোল্টজের ওঠা-নামা, কোনো পাইপের ভেতরের বাতাস বা তরল পদার্থের চাপ কম-বেশি হওয়া, বাতাসের প্রবাহ ও চাপ পরিবর্তিত হওয়া ইত্যাদি পরিমাপনের ভিত্তিতে এনালগ কম্পিউটার কাজ করে।
২) ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)
ডিজিটাল কম্পিউটার Digital Computer কাজ করে প্রতীকী সংখ্যার মাধ্যমে প্রাপ্ত Instruction এর মাধ্যমে বাইনারি কোড অর্থাৎ ভোল্টেজের উপস্থিতি শনাক্ত করে এর মাধ্যমে কাজ করে।
কাজের ক্ষমতা এবং আকারের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটার প্রধানত ৪ ভাগে বিভক্ত। যেমন:
ক) মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer) :
মাইক্রো কম্পিউটার হচ্ছে ছোট আকারের কম্পিউটার। একজন ব্যক্তি একটি মাত্র কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন। অফিস-আদালত, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রয়োজন ইত্যাদি সব ধরনের কাজে মাইক্রো কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। অর্থাৎ আমরা হর-হামেশা যে কম্পিউটার ব্যবহার করছি এগুলিকেই Micro Computer বলে। পেন্টিয়াম-১ থেকে Core i7 পর্যন্ত, বর্তমানের জনপ্রিয় IBM কম্পিউটার বা অ্যাপেল ম্যাকিনটোস-এর ম্যাক পাওয়ার পিসি হচ্ছে জনপ্রিয় মাইক্রোকম্পিউটার। একে পার্সোনাল কম্পিউটার (PC) বা বিজনেস কম্পিউটার (BC)ও বলা হয়। সাধারণত দুই ধরনের পার্সোনাল কম্পিউটার পাওয়া যায়। একটির নাম ডেস্কটপ (Desktop) এবং অন্যটির নাম পোর্টেবল . (Portable)। ডেস্কটপ টেবিলে রাখা হয় এবং স্থানান্তর যোগ্য নহে। যদি কয়েকটি ডেস্কটপ কম্পিউটার দিয়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়, তবে প্রধান কম্পিউটারটিকে সার্ভার বা ডোমেইন বলে এবং অন্যগুলিকে ওয়ার্কস্টেশন বলে।
পোর্টেবল (Protable) কম্পিউটার তিন ধরনের:
ল্যাপটপ (Laptop): ব্রিফকেসের মতো দেখতে এবং এক (১) থেকে তিন (৩) কিলোগ্রাম ওজন হয়ে থাকে। এটা ডেস্কটপের মতোই কাজ করে।
নোটবুক (Notebooks): এটা দেখতে নোটবুকের মত এবং এক (১) থেকে দুই (২) কিলোগ্রাম ওজন হয়ে থাকে।
পামটম (Palmtop): এটি দেখতে পকেট ক্যালকুলেটরের মতো।
খ) মিনি কম্পিউটার (Mini Computer):
মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে মিনি কম্পিউটারের কাজের ক্ষমতা ও কাজের গতি অপেক্ষাকৃত কম। মেইনফ্রেম কম্পিউটার ও মিনি কম্পিউটারের মধ্যে কাজের ধরন ও প্রক্রিয়াগত দিক থেকে কোনো পার্থক্য | নেই। উদাহরণ: IBM S/34, IBM S/36, PDP 11, NCR S/9290 ইত্যাদি।
গ) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer):
সুপার কম্পিউটারের চেয়ে তুলনামূলক কম শক্তিশালী কম্পিউটার হলো মেইনফ্রেম কম্পিউটার। অফিসআদালত, বড় বড় শিল্প ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ ও জটিল তথ্য ব্যবস্থাপনার কাজে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: IBM 4300, UNIVAC 1100,
ঘ) সুপার কম্পিউটার (Super Computer):
সুপার কম্পিউটার হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী, ব্যয়বহুল এবং সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন কম্পিউটার। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এসব কম্পিউটার ব্যবহার হয় না, কেবল সরকারি বা খুব বড় ধরনের প্রতিষ্ঠানে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), আগারগাঁও, ঢাকাতে একটি সুপার কম্পিউটার রয়েছে। উদাহরণ: আমেরিকায়-CYBER-205, জাপানের নিপ্পন কোম্পানির-SuperSXII.
৩) হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrip Computer)
এটা মূলত Digtal ও Analog কম্পিউটারের কাজের প্রক্রিয়ার সাথে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়। এতে ডেটা গ্রহণ করে এনালগ প্রক্রিয়ার এবং প্রসেসের জন্য সংখ্যায় রূপান্তরিত করে ডিজিটাল অংশে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতাল, ক্ষেপণাস্ত্র, নভোযান, আবহাওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
0 comments:
Post a Comment